সেক্স বা যৌন চাহিদা বা ক্ষমতা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল সেক্স হরমোন (sex hormone) কমে যাওয়া। আর এই হরমোনটির নাম হচ্ছে টেস্ট’স্টেরন (testosterone)।
লাইফস্টাইল পরিবর্তন ও প্রয়জনে ওষুধ সেবনে এই হরমোন বৃদ্ধি করা সম্ভব। তাছাড়া কিছু খাবার, যেমন মাছ, সবুজ শাক সবজি, ডিম ও ডার্ক চকলেট।
টেস্ট’স্টেরন হরমোনের কাজগুলো হচ্ছে
সেক্স এর ইচ্ছা
হাড় ও মাংসপেশী মজবুত করা
শুক্রাণু বৃদ্ধি বা তৈরি
রক্ত কণিকা তৈরি
বয়স বাড়ার সাথে এই হরমোন কমতে থাকে, তাছাড়া অন্য কারণেও টেস্ট’স্টেরন কমতে পারে যেমন, বিশেষ কিছু ঔষধ সেবনকালিন সময়, শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমলে অথবা অসুস্থতার জন্য।
এই হরমোনের ঘাটতি জানার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, তবে প্রাথমিক ভাবে লাইফস্টাইল এ পরিবর্তন, ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত খাবার এই ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
যেসব খাবার টেস্ট’স্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে-
চর্বিযুক্ত মাছ
স্যামন ও সারডিন মাছ এই কাতারে এগিয়ে কারণ এতে আছে উচ্চমাত্রায় নিউট্রিশান, তবে স্যামন মাছ একটু দামী হওয়ায়, ইলিশ(hilsha), সুরমা (king mackerel) মাছও এই তালিকায় যুক্ত করা যেতে পারে। আর এই মাছগুলোতে উচ্চমাত্রায় ওমেগা-৩, ভিটামিন- ডি, জিংক, আয়োডিন, সেলেনিয়াম ও পটাসিয়াম থাকায়, শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে।
তবে কোনোভাবেই এই খাবারগুলো তেলে ভেজে বা প্রসেস করে স্বাদযুক্ত করে খাও যাবে না, যা হয়ত শরীরের হরমোনের ভারসাম্যে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে।
সবুজ শাক সবজি
সবুজ শাক সবজি হল, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টঅএর ভালো একটা উৎস, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল “ম্যাগনেশিয়াম” নামক একটি মিনারেল যা বয়স বাড়ার সাথে সাথে টেস্টস্টেরন এর লেভেল ঠিক রাখতে খুবই সহায়ক।
ম্যাগনেসিয়াম শরীরের অক্সিডেটীভে স্ট্রেস কমিয়ে টেস্টস্টেরন এর কার্যক্ষমতা বাড়ায়। অক্সিডেটীভে স্ট্রেস হচ্ছে শরীরের আন্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্রি র্যাডিক্যাল এর মধ্যে ভারসাম্যহীনতা।
অক্সিডেটীভ স্ট্রেস আর ইনফ্লামেশন (inflamation) শরীরে টেস্টস্টেরন এর লেভেল কমাতে পারে।
ডার্ক চকোলেট
এতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম ও ফ্লাভনইড এন্টিঅক্সিডেন্ট, যেগুলো টেস্টস্টেরন এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ
আভোকেডো
এই ফলটিকে এফ্রোডিজিয়াক (aphrodisiac) বলা হয়, কারণ প্রাচীন রোমে এটিকে সেক্স বর্ধক হিসাবে ব্যাবহার করা হত।
আভোকেডোতে ( avocado) আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বা চর্বি, ম্যাগনেসিয়াম ও বোরন, যেগুলো টেস্টস্টেরন লেভেল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ডিম
ডিমের কুসুমে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বা চর্বি, প্রোটিন আর সিলেনিয়াম। সিলেনিয়াম এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। যা শরীরের টেস্টস্টেরন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
চেরি, বেরি আর আনার
চেরি, বেরি আর আনার এ আছে উচ্চমাত্রায় ফ্লাভনইড এন্টিঅক্সিডেন্ট যা টেস্টস্টেরন তৈরি করে এমন সেলগুলোকে রক্ষা করে এবং টেস্টস্টেরন উৎপাদন বাড়ায়।
এই ফলগুলো অক্সিডেটীভে স্ট্রেস লেভেল কমিয়ে টেস্টস্টেরন এর মাত্রা বাড়ায়। তাছাড়া এ ধরণের ফলগুলো শরীরের জন্য খুবই ভালো এবং হরমোন এর মাত্রা বাড়াতে খুবই সহায়ক।
সেলফিশ
সেলফিশ () এর মধ্যে শামুক (clams) ও ঝিনুক(oyster) হল জিংক(zinc ), সেলেনিয়াম(selenium) আর ওমেগা-৩(omega-3) তে ভরপুর, যা শরীরে টেস্টস্টেরন এর লেভেল বজায় রাখতে সাহায্য করে।
তাহলে দেখা গেল, যেসব খাবারে জিংক, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড , সেলেনিয়াম বেশি মাত্রায় থাকে সেগুলো নিয়মিত খেলে শরীরে টেস্টস্টেরন এর মাত্রা বজায় থাকে আরে সেক্স বা যৌন ক্ষমতাও অটুট থাকে দীর্ঘদিন।
Article Source- healthline
Image by Robert Owen-Wahl from Pixabay
Image by Steve Buissinne from Pixabay